Tuesday, May 31, 2022

ঘরেই তৈরি করুন কৃমিনাশক ও লিভার টনিক গবাদিপশুর (ইউটিএগ্রোবিডি)

 

লবঙ্গ, মৌরি, কালো আখরোট, শুকনো লাল মরিচ, সরিষা দানা ও ইছবগুল (উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে)

#utagrobd #krishibd #agrofarm #cowfarm #gotfarm #ইউটিএগ্রোবিডি #ইউটিএগ্রো #এগ্রোবিডি


গরুর কৃমি বা অন্তঃপরজীবী নিয়ে খামারিদের চিন্তার শেষ নেই। আবার যারা মোটাতাজাকরণ খামার করেন তাদের জন্য একই সঙ্গে জরুরি লিভার টনিক। অর্থাৎ দুর্বল গরু কম দামে কিনে মাত্র কয়েক মাসের প্রজেক্টে দ্রুত সারিয়ে তুলে গায়েগতরে আকর্ষণীয় করে তুলতে দরকার পড়ে তাৎক্ষণিক ফলদায়ক চিকিৎসা ও টনিকের ব্যবস্থা। এর জন্য মোটামুটি সবাই বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন কোম্পানির কৃমিনাশক ওষুধ বা ইনজেকশন আর লিভার টনিকের ওপর নির্ভর করেন।


ওষুধ কোম্পানির কৃমিনাশক ও লিভার টনিক ব্যবহারের সমস্যা হলো, এসব ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞ পশুডাক্তারের (ভেট) শরণাপন্ন হতে হয় অথবা খামারিকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হয়। তাছাড়া কখন কতোদিন পরপর কী পরিমানে এসব ওষুধের ডোজ ব্যবহার করতে হবে সেটিরও হিসাব রাখতে হয় টনটনা।

কিন্তু যারা ছোট খামারি ও অনভিজ্ঞ সেই সঙ্গে সামর্থ্যও কম তাদের কি হবে? একদিকে কৃমিনাশক ও লিভার টনিকের বেশ দাম অন্যদিকে বিশেষ করে গ্রামেগঞ্জে অভিজ্ঞ ভেটরা মোটা অংকের ভিজিট নেন। এই পোস্টটি সেইসব খামারিদের জন্যই। এখানে দেখানো হয়েছে কীভাবে ঘরেই হারবাল (ভেষজ বা সোজা কথায় কবিরাজি) কৃমিনাশক ও লিভার টনিক বানানো যায়। এই ভেষজের প্রধান উপাদানগুলো আপনার হাতের কাছেই পাবেন। বানিয়ে নেয়ার জন্য কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতার দরকার নেই।

এই রেসিপিটি কিন্তু পরীক্ষিত। আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।

ডোজ: প্রতি ৩০ পাউন্ড বা সাড়ে ১৩ কেজি ওজনের জন্য ১ চা-চামচ আর ১০০ পাউন্ড বা ৪৫ কেজির জন্য এক টেবিল চামচ।

একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, ভেষজের ওভারডোজ কখনো মানুষ বা গবাদিপশুর ক্ষতি করে না। আর ভেষজ ওষুধ নিজে খাওয়া হোক আর গবাদিপশুকে খাওয়ানো হোক সব সময় ওভারডোজ হওয়া ভালো, কখনোই ডোজের কম খাওয়ানো ঠিক নয়। তাতে ফল নাও পাওয়া যেতে পারে।

কৃমিনাশক ও টনিকের উপাদান
১/২ কাপ গোটা লবঙ্গ (Cloves) বা পাউডার
১ কাপ মৌরির (Anise Seed) পাউডার (অপশনাল)
১ কাপ কালো আখরোটের (Black Walnut) খোসা*
১ কাপ লাল মরিচ (Cayenne Pepper) *
১ কাপ দারুচিনি (Cinnamon)
১ কাপ রসুন (Garlic) (পাউডার বা বেটে নেওয়া)*
১ কাপ আদা (Ginger) বাটা বা পাউডার
১ কাপ সরিষা (Mustard seed) বাটা
১ কাপ ইছবগুলের (Psyllium seed) পাউডার
১ কাপ রোজমেরি পাতার (Rosemary leaf) পাউডার
২ কাপ ভুই তুলসির পাতা (Sage leaf)। এটি ভূ-তুলসি, ভাত তুলসি, কাকা-বুরাদি, কোকাবুরাদি নামেও পরিচিত। বনেজঙ্গলে জন্মে। সবুজ নরম পাতা।
২ কাপ থাইম পাতা (Thyme leaf )। এটিকে হিন্দিতে বলে বনজ বইন। (বাংলা নাম পাওয়া যায়নি)
২ কাপ সোমরাজ (Wormwood)*
এখানে তারকাচিহ্নিতগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
২ কাপ কাইজেল গুড় বা ডায়াটোমেশাস মাটি (Diatomaceous Earth)।

ওয়ার্মউড বা সোমরাজ, সেজ বা ভুই তুলসী, থাইম পাতা, রোজমেরি পাতা ও কাইজেল গুড় (উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে)

উপরের ভেষজগুলোর সবগুলো যদি পাউডার ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি মেশালে পুরো মিশ্রণটি আরো পাউডারের মতো বা ধুলির মতো হবে। এটি সরাসরি খাওয়াতে গেলে ফুসফুসে ঢুকে গিয়ে ক্ষতি করতে পারে। এ কারণে এটি আলাদা করে খাওয়ানো যেতে পারে। আর যদি মিশ্রণ থকথকে হয় তাহলে সমস্যা নেই।

কাইজেল গুড় কিন্তু বহিঃপরজীবী যেমন, উকুন, মাছি, আঁটুলি ইত্যাদি দমনে বেশ কাজের।

কাইজেলঘুর আর লবঙ্গ বাদে অন্য ভেষজগুলো কাপে নেয়ার আগে কেটে ছোট ছোট করে নিতে হবে। আর এখানে কাপের আকার বলা হয়নি। কারণ আপনার প্রয়োজন বেশি বড় কাপ নিবেন কম লাগলে ছোট কাপ ব্যবহার করবেন। কম লাগলে কফের সিরাপের সাথে যে কাপটি দেওয়া হয় সেটি ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যবহারবিধি
সবগুলো উপাদান ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর একটি কাচের বোতল বা বয়ামে করে অন্ধকার ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন। তবে মিশ্রণ শুকনো হলে এভাবে রাখতে পারবেন। তা না হলে মিশ্রণটি বেশিক্ষণ সংরক্ষণ করা যাবে না। এ কারণে বাজারে পাউডার না পেলে বাড়িতেই শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন।

টানা সাত দিন সকাল আর বিকালে খাওয়াতে হবে। ৬-৮ সপ্তাহ পরপর অথবা প্রয়োজনমতো এই ডোজ চালিয়ে যেতে হবে।
গর্ভবতী গবাদিপশুকেও এ কৃমিনাশক খাওয়ানো যাবে। তবে সে ক্ষেত্রে মিশ্রণে সোমরাজ আর কালো আখরোট ব্যবহার করা যাবে না।

সোমরাজ এবং কালো আখরোট মিশ্রণে না রেখে আলাদা করে ব্যবহার না করতে চাইলে ডোজ নিচের মতো হবে:
প্রতি ৩০ পাউন্ডের জন্য এক চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ (এক চতুর্থাংশ)। একইভাবে সাত দিন দিনে দুইবার খাওয়াতে হবে। একইভাবে কালো আখরোট প্রতি ডোজে চা চামচের ৮ ভাগের এক ভাগ খাওয়াতে হবে।

বাছুর বা বাচ্চার জন্য কৃমিনাশক
একই মিশ্রণ বাছুরের বয়স তিন সপ্তাহ হলে শুরু করা যেতে পারে। টানা তিন দিন খাওয়াতে হবে এবং এটি ৩-৪ সপ্তাহ পর পর একই নিয়মে চলবে।

বয়স যখন ছয় মাস হবে তখন ৮ সপ্তাহ পরপর ডোজ চলবে।

ডায়রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তিন দিনের ডোজ দিন। গবাদিপশুর পাশাপাশি পোল্ট্রি বা অন্যান্য পাখির কক্সিডিওসিস বা রক্ত আমাশয় রোগের উপশমেও এটি বেশ ভালো কাজ দেয়।

এতোক্ষণে অনেকে হয়তো ভাবছেন, গবাদিপশু পাখিকে পাউডার জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেমন ঝামেলার কাজ তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ। তাহলে আমরা কেন কবিরাজি ওষুধের মতো গুলি, বড়ি বা গুটি বানাচ্ছি না।

এই কাজটা করতে চাইলে ওষুধটি সংরক্ষণ নিয়ে একটু ঝামেলায় পড়বেন। তবে পাউডার আকারে সংরক্ষণ করে খাওয়ানো সময় গুলি বানিয়ে খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে মোলাসেস বা ঝোলাগুড় (চিটাগুড়) সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে গবাদিপশু মজা করে খাবে।

এ মিশ্রণটা যেভাবে বানাবেন
১/২ কাপ (৮ টেবিল চামচ) ভেষজের গুঁড়ো
১/৪ কাপ (৪ টেবিল চামচ) আটা/ময়দা, এটি বড়ি তৈরির করতে আঠার মতো কাজ করবে। 
এর সঙ্গে ১/৪ কাপ ঝোলাগুড় বা মধু বা ১/২ থেকে ১/৩ কাপ বাদামের মাখন (পিনাট বাটার) মিশিয়ে হাত দিয়ে ভালো করে চটকে নিন। অথবা ফুড প্রসেসর বা ব্লেন্ডার দিয়ে মিশিয়ে ময়দার তালের মতো বানিয়ে নিন। এরপর সমান ১২ ভাগে ভাগ করুন। হাতের তালুতে ঘুরিয়ে মার্বেল গুটির মতো বানিয়ে নিন। চাইলে চিটচিটে ভাব দূর করতে ময়দায় গড়িয়ে নিতে পারেন। প্রতিটি গুটি ২ চা-চামচের সমান।

এই বলে ময়দা ও চিটাগুড় থাকার কারণে গবাদিপশু হাত থেকে কেড়ে নিয়ে খাবে। না খেলে মুখে জোর করে গুঁজে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। তবে খেয়াল করবেন হাতে যেন কামড় বসিয়ে না দেয়। ছোট বাচ্চাকে খাওয়ানো সময় ভেঙে ছোট ছোট করে নিয়ে খাওয়ান।





...............................................................TAG...................................................................................
ফসল, পশু-পাখি পালন, কৃষি প্রযুক্তি, শাক-সবজি, crops, দানাশস্য, পশু-পাখির রোগ, ডিজিটাল বই, মৎস্য চাষ, পশুপাখির খাদ্য, বিবিধ, অর্থকরী ফসল, বায়োফ্লক, জৈব, কৃষি, ডাল, ১২ মাসের রুটিন, গরুর জাত, তেলবীজ, ফসলের রোগ, গরু, মসলা, ছাগল পালন, ধানের রোগ, ফল, ঔষধি উদ্ভিদ, চাষ পদ্ধতি, পেঁয়াজ, ভেষজ, livestock, ছাগলের খামার, ধান, নগরকৃষি, মুরগির জাত, হাইড্রোপনিক, ওষুধি গাছ, গরু মোটাতাজাকরণ, জমিজমা, তুলা-রেশম ,দেশী জাতের গরু, প্রাণী অধিকার, ভ্যাকসিন, সাথি ফসল, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি, ছাগল, ছাগলের জাত, ছাদবাগান, বিকল্প খামার, বিদেশী ফসল ,ভূমি পরিমাপ, মোটাতাজাকরণ, লাইভস্টক, garden ,আলু, গরুর খামার, ডেইরি, দুগ্ধ খামার, ফলের বাগান, ভেড়া, মুরগি, মুরগী হাইড্রোপনিক পদ্ধতি,chicken grass, আদি জাত, আন্তঃফসল, ইউরিয়া, উন্নত জাত, এমওপি ,কাঠ, কৃমিনাশক, কৃষি ক্যালেন্ডার, কোল্ড ইনজুরি, ক্যাপসিকাম, ক্রনিক ব্লট, খরগোশ, খাঁচায় মাছ চাষ, খাটো হাইব্রিড নারিকেল, খেসারি, খড়ের পুষ্টিগুণ, গরু হিটে না আসার কারণ, গরুর খাবার, গরুর শেড, গরুর-জাত, গাভী পালন, গাড়ল, গোখাদ্য, ঘোড়া শিম, চট্টগ্রামের লাল গরু, চিংড়ি, চোখের কৃমি, ছাগল পরিবহন, জিঙ্ক, জৈব বালাইদমন, টমেটো চাষ, টিএসপি, ডিওপি, ড্যাপ, ড্রাগন ফল, তুলা চাষ পদ্ধতি, ত্বীন ফল, দলিলপত্র, ধানের খোল পচা রোগ, ধানের পাতা পোড়া রোগ, ধানের ব্লাস্ট, ধানের লক্ষ্মীর গু, নর্থ বেঙ্গল গ্রে ক্যাটল, নারিকেল, নার্সারি, নীল, পটাশ, পাউলোনিয়া, পাবনা ক্যাটল, পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া, ফসলের পুষ্টি ঘাটতির লক্ষণ, বাঁশ, বাদামি দাগ রোগ, বারি জ্যাক শিম-১, বালাইনাশক, বিইউ শিম ৫, বিসিএস স্কোর, বেলজিয়ান ব্লু, ব্রয়লার, ব্রয়লার মুরগি, ব্লাড প্রোটোজোয়া, ব্ল্যাক বেঙ্গল, ভেড়া পালন, মহিষ, মহিষ পালন, মাছ, মাছ চাষ, মাজরা পোকা, মাটির স্বাস্থ্য, মিরকাদিমের সাদা গরু, মুন্সীগঞ্জ জাতের গরু, মুরগির টিকা. ময়ূরের খামার, রাসায়নিক সার, রেড চিটাগাং ক্যাটল, লাউ, লিভার টনিক, লেবু, লেয়ার মুরগি পালন, শুকর পালনশেড নির্মাণ, সংকর জাতের গরু, স্টিভিয়া, স্ট্রবেরি চাষ, হাঁস পালন, হাঁস-মুরগি পালন, হাজল পদ্ধতিতে মুরগীর বাচ্চা ফুটানো

শেয়ার করুন

0 coment rios: