Saturday, June 4, 2022

বস ইন্ডিয়াকাস জাতের ইন্ডিয়ান যে গরুটি পৃথিবীব্যাপী সবচে জাতের গরু


 গির জাতের গরু। বস ইন্ডিয়াকাস জাতের ইন্ডিয়ান যে গরুটি পৃথিবীব্যাপী সবচে বেশি জাত উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটাই হচ্ছে গ্রীষ্মন্ডলীয় চরম আবহাওয়ার গির জাতের গরু। গড় ওজন : ষাঁড় : ১২০০ কেজি এবং গাভী ৮০০ কেজি। গির জাতের গরু দেখতে অসাধারণ, প্রচন্ড রোগ প্রতিরধী ও কর্মঠ। বাংলাদেশে বর্তমানে এ জাতের গরুর বীজ পাওয়া যায়।

গির গরুর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

জাতের নাম গির / Gir

জাতের ধরন দুধ ও মাংস

গড় ওজন ষাঁড়- ১২০০ কেজি

গাভী- ৮০০ কেজি

বাছুর- ৩০ কেজি

আদি বাসস্থান ইন্ডিয়ার গুজরাটে

বিস্তৃতি ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়ার প্রাই সকল গরু পালনকারী দেশ।

(গির গরুর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি)


 

গির গরুর গড় ওজন

ষাঁড় গরু- ১২০০ কেজি

গাভী গরু- ৮০০ কেজি

বাছুর গরু- ৩০ কেজি

গির গরু পালনকারী দেশ

এই গরুর জাতটি সারা প্রথিবীতে পালন করা হয়। এই গরুর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট থাকায় সারা পৃথিবিতে গরুর জাত উন্নয়নে এই জাত টি ব্যবহার করা হয়েছে।



 

এশিয়ার প্রায় সকল দেশে এই গরু পালন করা হয়। বাংলাদেশে এই গরুর কোন ব্রিড বা বীজ আগে পাওয়া যেত না। বর্তমানে এডিএল বা আমেরিকান ডেইরী লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই বীজ আমদাণী ও বাজারজাত করছে।


এছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশর প্রায় সকল দেশে এই গির জাতের গরু পালন করা হয়।



 

গির গরুর খামার

এই গরু ইউরোপ আমেরিকাতে যেমন উন্মুক্ত চারন ভূমি তে উন্মুক্ত খামারে পালন করা হয় তথাপি অনেক জাইগায় আবদ্ধ গির গরুর খামার দেখতে পাওয়া যায়। গরু মোটাতাজাকরণ এর ক্ষেত্রে এই গরু প্রধান চয়েজ হতে পারে। এই গরুর মোটাতাজাকরণ খামার করলে খাদ্য খরচ যেমনি কম পড়ে তেমনি কম সময়ে অধীক উৎপাদন সম্ভব হয়। এই গরুর রোগ-বালাই খুব কম তাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খরচ খুবই কম।


গির জাতের গরুর উৎস দেশ

গির জাতের গরুর উৎস দেশ ভারত। ‘জঙ্গল’ নামটি সৌররাষ্ট্রের বনাঞ্চল এবং ভারতের গুজরাটের সংলগ্ন ‘গির’ বন অঞ্চল থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তবে, গুজরাট যদিও আসল গরু তবে পৃথিবীতে আর কোনও গ্রীষ্মমন্ডলীয় বা গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশ নেই যা গির বা গির থেকে গরুকে বিকাশ করে না।


ইন্ডিয়ান ইন্ডিজেনাস জাতের গরু হলেও এখন পৃথিবীতে গিরের সবচে বেশি জনপ্রিয়তা ব্রাজিলে।


ইন্ডিয়াতে এক গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমানে গুজরাটে যেখানে ৫০০০ ইন্ডিজেনাস গির রয়েছে সেখানে ব্রাজিলে রয়েছে ৫ মিলিয়ন এর অধিক গির জাতের গরু।



 

গির জাতের গরু

গির জাতের গরু

গির গরুর বৈশিষ্ট ও সুবিধা

যদিও গারো লাল রং হলো গির জাতের গরুর প্রধান রং তবে এটি হালকা হলুদ এবং সাদা রঙেও পাওয়া যায়। এখন গিরকেও দেখা যাবে কালো রঙে। মোটা এবং পিছনে-বাঁকা শিং এবং প্রশস্ত কপাল গির গরুর চেহারাতে আভিজাত্যের ছাপ ফুটে ওঠে।


এর চওড়া কপাল অতি উষ্ণ আবহাওয়াতে গিরের শরীর ঠান্ডা করার রেডিওটর হিসাবে কাজ করে।


এই লম্বা ঝুলানো কান এবং জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে উঁচু এর চুট গির গরুতে এনে দিয়েছে সৌন্দের্যের এক বিশেষ মাত্রা।


দেখা যায় গির গরু উষ্ণ এবং আদ্র আবহাওয়াতে খুব ঘামতে থাকে। যার ফলে তাপ নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন প্রকার পরজীবী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়। এটি এই গির জাতের গরুর একটা বিশেষ বৈশিষ্ট। জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে শান্ত এবং অনুগত গরু হিসাবে পরিচিত গির গরু। মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ থাকতে পছন্দ করে এরা।



 

দেখা যায় এই গির জাতের গরুর ষাঁড় পুরো গোষ্ঠীর সুরক্ষাকারী হিসাবে কাজ করে। উচ্চ রোগ প্রতিরোধী এই গরু পালন করা খুব সহজ এবং যে কোনও খাবারে এরা অভ্যস্ত হয়। গির গরু 20-24 মাসে প্রথমবারের জন্য এবং গরু 30-34 মাসে দ্বিতীয় বার বাছুর জন্ম দেয়।


গির জাতের গরু

গির জাতের ষঁড় ও গাভী

ভারতে গির গাভীর বাৎসরিক গড় দুধের উত্পাদন 1600 কেজি। যদিও ভারতে বাৎসরিক 3100 কেজি দুধের উত্পাদন রেকর্ড আছে। ভারতে ‘হিরাল’ নামে এক প্রকার গির গরু 7200 লিটার বাৎসরিক দুধ দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। আর ব্রাজিলের গির গরুর গড় দুধ উত্পাদন বাৎসরিক 3000-3200 কেজি। এবং ব্রাজিলের ‘শিরা’ নামের এক গির গরুর দৈনিক ৬২ লিটার দুধ দেয়ার রেকর্ড রয়েছে।


এই গির গাভী বাচ্চা দেওয়ার ৪ মাস পর্যন্ত দুধ উৎপাদন ঠিক থাকে। এরপরে ধীরে ধীরে দুধের উৎপাদন দ্রুত কমে যায়। তবে কমে গেলেও ২৮০-৩০০ দিন পর্যন্ত দুধ উৎপাদন চলতে থাকে। একটি দীর্ঘ সময় ধরে দুধ উৎপাদন চলতে থাকে। গাভীতে সিমেন দেয়ার পর দ্রুত দুধ কমে যাওয়া দুধ উৎপাদনের গরু হিসাবে এই জাতের প্রধান সমস্যা।


তবে উচ্চ মাত্রার ফ্যাট এবং A2 মিল্ক প্রোটিন সমৃদ্ধ এই গিরের দুধ খুবই সুস্বাদু। অন্যান্য জেবু জাতের গরুর মতোই এই জাতের গরুর দুধে রয়েছে ৪.১ -৪.৯ মাত্রার ফ্যাট এবং প্রায় সময় পরিমান মিল্ক প্রোটিন।


ষাঁড়ের এই জাতটি একটি বৃহৎ আকারের জাত এবং এর মাংস সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। যে বৈশিষ্ট্যটি ‘গির গরুকে’ অন্যান্য জেবু জাতের গরুর চেয়ে উচ্চতর করে তুলেছে তা হ’ল তার দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধি বা FCR। গির গরুর বাছুরগুলি খুব দ্রুত বেড়ে ওঠে। এই ষাঁড় দেখতে সুন্দর ও পালনে সুবিধা থাকার কারনে বিক্রির সময় তুলোনামুলক ভালো দাম পাওয়া যায়।


এই গরুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব

গির জাতের গরু ভাল মানের এবং উচ্চ প্রোটিন এবং ফ্যাটযুক্ত দুধ উত্পাদন করে তাই এই জাতের দুধের দাম বেশি এবং চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও, এই গির জাতের গরুর গো-মাংস খুব সুস্বাদু এবং ষাঁড়ের আকারও বড়। তাই মাংসের জন্য গির রাখা লাভজনক। তবে এই জাতের সবচে বেশি গুরুত্ব যে কারণে সেটা হলো জাত উন্নয়ন।


আমাদের দেশে যতগুলো বড় খামার আছে, যারা জাত উন্নয়ন করেছে, তাদের প্রত্যেকের কাছে এই জাতের গরু আছে। কারণ গির এর সাথে উন্নয়ন করা ফ্রিজিয়ান বা জার্সি জাতের গাভী উপমহাদেশের অন্য যেকোনো জাতের গভীর চেয়ে শক্ত, রোগ প্রতিরোধী, অধিক ও উন্নত মানের দুধ, দেখতে সুন্দর এবং সাইজ ও বড় হয়ে থাকে।


গির একটি উচ্চ প্রজননক্ষম গরু। বস ইন্ডিকাস জাতের অন্য গরুর জন্য যেখানে গড়ে ১.৬ টা সিমেন স্ট্রিপ দরকার হয়, সেখানে এই জাতের জন্য দরকার হয় গড়ে স্ট্রিপ দরকার হয় ১.৩ টা। এই জাতের গরু যেহেতু বস ইন্ডিকাস জাতের মধ্যে সবচে উচ্চ প্রজননক্ষম, তাই একটি গির গাভী জীবনকালে গড়ে ১২ টি বাচ্চা দেয়।


গির যেহেতু উপমহাদেশের বস ইন্ডিকাস প্রজাতি, তাই ইউরোপে বস বৃষের জাতের তুলনায় দুধের উৎপাদনকাল কম এবং দুধের উত্পাদন কম লাভজনক। এছাড়াও, এই গরুর জাতটি ইউরোপের গরুর ক্রস জাতের তুলনায় 4 মাস বেশি সময় নেয়। যেখানে ক্রস জাতের গাভী ২৮ মাসে প্রথমবার জন্ম দেয়, এই জাতটি ৩০-৩৪ মাস সময় নেয়।


গির জাতের গরুর জীবনকাল

গির গরুর গড় আয়ু সাধারণত 20-22 বছর হয়। যেহেতু এই গরুর জাতটি বস ইন্ডিকাস জাতের সর্বোচ্চ বংশনকারী, তাই একটি গির গরু জীবদ্দশায় গড়ে 12 টি বাছুরের জন্ম দেয়।


বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গির জাতের গরুর পালন একটি সম্ভাবনাময় দিক কেননা গরুর জাত উন্নয়নে এই গির জাতের গরুর কোন বিকল্প নেই। দুগ্ধ খামার এর জন্য এই জাত খুব বেশি উপযোগী নয় বলে আমার ধারনা।


আর তাই প্রজননে এই গির জাতের গরুর সিমেন ব্যবহার করার আগে সঠিক প্লান করে নিতে হবে।


...............................................................TAG...................................................................................

ফসল, পশু-পাখি পালন, কৃষি প্রযুক্তি, শাক-সবজি, crops, দানাশস্য, পশু-পাখির রোগ, ডিজিটাল বই, মৎস্য চাষ, পশুপাখির খাদ্য, বিবিধ, অর্থকরী ফসল, বায়োফ্লক, জৈব, কৃষি, ডাল, ১২ মাসের রুটিন, গরুর জাত, তেলবীজ, ফসলের রোগ, গরু, মসলা, ছাগল পালন, ধানের রোগ, ফল, ঔষধি উদ্ভিদ, চাষ পদ্ধতি, পেঁয়াজ, ভেষজ, livestock, ছাগলের খামার, ধান, নগরকৃষি, মুরগির জাত, হাইড্রোপনিক, ওষুধি গাছ, গরু মোটাতাজাকরণ, জমিজমা, তুলা-রেশম ,দেশী জাতের গরু, প্রাণী অধিকার, ভ্যাকসিন, সাথি ফসল, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি, ছাগল, ছাগলের জাত, ছাদবাগান, বিকল্প খামার, বিদেশী ফসল ,ভূমি পরিমাপ, মোটাতাজাকরণ, লাইভস্টক, garden ,আলু, গরুর খামার, ডেইরি, দুগ্ধ খামার, ফলের বাগান, ভেড়া, মুরগি, মুরগী হাইড্রোপনিক পদ্ধতি,chicken grass, আদি জাত, আন্তঃফসল, ইউরিয়া, উন্নত জাত, এমওপি ,কাঠ, কৃমিনাশক, কৃষি ক্যালেন্ডার, কোল্ড ইনজুরি, ক্যাপসিকাম, ক্রনিক ব্লট, খরগোশ, খাঁচায় মাছ চাষ, খাটো হাইব্রিড নারিকেল, খেসারি, খড়ের পুষ্টিগুণ, গরু হিটে না আসার কারণ, গরুর খাবার, গরুর শেড, গরুর-জাত, গাভী পালন, গাড়ল, গোখাদ্য, ঘোড়া শিম, চট্টগ্রামের লাল গরু, চিংড়ি, চোখের কৃমি, ছাগল পরিবহন, জিঙ্ক, জৈব বালাইদমন, টমেটো চাষ, টিএসপি, ডিওপি, ড্যাপ, ড্রাগন ফল, তুলা চাষ পদ্ধতি, ত্বীন ফল, দলিলপত্র, ধানের খোল পচা রোগ, ধানের পাতা পোড়া রোগ, ধানের ব্লাস্ট, ধানের লক্ষ্মীর গু, নর্থ বেঙ্গল গ্রে ক্যাটল, নারিকেল, নার্সারি, নীল, পটাশ, পাউলোনিয়া, পাবনা ক্যাটল, পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া, ফসলের পুষ্টি ঘাটতির লক্ষণ, বাঁশ, বাদামি দাগ রোগ, বারি জ্যাক শিম-১, বালাইনাশক, বিইউ শিম ৫, বিসিএস স্কোর, বেলজিয়ান ব্লু, ব্রয়লার, ব্রয়লার মুরগি, ব্লাড প্রোটোজোয়া, ব্ল্যাক বেঙ্গল, ভেড়া পালন, মহিষ, মহিষ পালন, মাছ, মাছ চাষ, মাজরা পোকা, মাটির স্বাস্থ্য, মিরকাদিমের সাদা গরু, মুন্সীগঞ্জ জাতের গরু, মুরগির টিকা. ময়ূরের খামার, রাসায়নিক সার, রেড চিটাগাং ক্যাটল, লাউ, লিভার টনিক, লেবু, লেয়ার মুরগি পালন, শুকর পালনশেড নির্মাণ, সংকর জাতের গরু, স্টিভিয়া, স্ট্রবেরি চাষ, হাঁস পালন, হাঁস-মুরগি পালন, হাজল পদ্ধতিতে মুরগীর বাচ্চা ফুটানো

#utagrobd #krishibd #agrofarm #cowfarm #gotfarm #ইউটিএগ্রোবিডি #ইউটিএগ্রো #এগ্রোবিডি #youtiagrobd

শেয়ার করুন

0 coment rios: